'আধা সরকারে থেকে মানুষের জন্য কিছুই করতে পারিনি'
গত চার বছর আধা সরকারে থেকে মানুষের জন্য কিছুই করতে পারিনি। সরকারে না থাকলে যে কাজ করা যায় না, তা আবার প্রমাণিত হয়েছে। তাই একা নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছি। জনগণের সমর্থন আছে। দেশের দায়িত্বশীল নাগরিকের সমর্থন পেলেই শতভাগ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। সবাই মিলেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন শুধু পল্লীবন্ধু এরশাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা।
শুক্রবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই'র 'তৃতীয় মাত্রা' অনুষ্ঠানে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এ কথা বলেন। উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চার বছর হয়েছে মহাজোটের সঙ্গে আছি। একই সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সরকার গঠনেও মন্ত্রী হিসেবে আমাদের জিএম কাদের আছেন। কিন্তু এ সরকারে অবদান রাখার সুযোগ আমাদের কতটুকু তা দেশের জনগণই উপলব্ধি করছেন। ১২ নদীর সমন্বয়ে আমার নির্বাচনী এলাকা। পাঁচ-দশটি ব্রিজ বানানোর ইচ্ছা ছিল। পারিনি। কিছু হিসাব-নিকাশ বাকি থাকায় এখনি জোট ছাড়ছি না। সময় হলেই পার্টি চেয়ারম্যান উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে কোনো পাতানো নির্বাচনে গিয়ে বিরোধী দল হওয়ার ইচ্ছা জাতীয় পার্টির নেই। জীবন সায়াহ্নে জনগণের স্বার্থে এরশাদ ক্ষমতায় যাবেন এটাই প্রত্যাশা। জাপা মহাসচিব বলেন, বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যা ঘটছে তা অনভিপ্রেত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনো এমন হয় যে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। হত্যা, ধর্ষণ, গুম সমানে চলছে। সরকারে থেকেও আমরা এর সমালোচনা করছি। কারণ আমরাও মহাজোটে আছি। এসব ব্যাপারে এইচ এম এরশাদ কোনো সমঝোতা করছেন না। শেয়ারবাজারের মতো যতগুলো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। সমাধানের পথও তুলে ধরেছেন। মানা, না মানা তাদের এখতিয়ার। তিনি বলেন, মানুষ আবার এরশাদকে দেখতে চায়। গত ২২ বছরে দুটি দলই জাতীয় পার্টিকে আঘাত করেছে। তারপরও দলটি টিকে আছে। দল বা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের শারীরিক সক্ষমতার ব্যাপারে বলেন, তিনি রোজ সকালে ব্যায়াম করেন, নামাজ পড়েন, গলফ খেলেন এবং তার মেধাশক্তির সঙ্গে তুলনা হয় এমন কারও সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেলে উনি তিন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা এবং ১৮ মাসের মধ্যে তা শেষ করার ক্ষমতা রাখেন। বুড়িগঙ্গা সেতু তিনি করেছেন, দাউদকান্দি, শম্ভুকুঞ্জ ও কামারখালী ব্রিজ তিনি করেছেন। যমুনা ব্রিজ তিনি শুরু করেছেন। পরবর্তী দুই সরকার তা শেষ করেছে। ঢাকা শহরের যত বড় সড়ক তার সময়ে হয়েছে। রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ছাত্ররাজনীতির নামে এখন চলছে টেন্ডারবাজি, খুন, সন্ত্রাসের রাজনীতি। সময়মতো জাতীয় নির্বাচন হওয়ার প্রশ্নে বলেন, দুটি দলের স্বার্থেই তাদের গণতান্ত্রিক চর্চায় থাকতে হবে। অন্যথায় যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে তা কারও কাম্য হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সময়ে সেনাবাহিনী দেওয়ার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন জাপা মহাসচিব।
Source: Bangladesh Pratidin, Jan 27, 2013