গণতন্ত্র নিয়ে সমস্যা পশ্চিমা দেশেও আছে
গণতন্ত্র এবং নির্বাচন নিয়ে সমস্যা পশ্চিমা দেশেও আছে। আমেরিকায়ও আমরা নির্বাচন নিয়ে সমস্যা দেখছি। তারা নিজেদের বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাদের নেই। জনগণ চায় না এমন কিছু বাইরের কোনো শক্তি ষড়যন্ত্র করে বাস্তবায়ন করে দেবে বা পশ্চিমারা চাপ দিয়ে আমাদের দেশে একটা ভালো গণতন্ত্র করে দেবে সেটা মনে করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। না পারলে এর মূল্য দেশের মানুষকেই দিতে হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. রওনক জাহান রবিবার রাতে চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, আমরা সবাই জানি জনগণ ক্ষমতার মালিক। তবে এটা দেখতে হলে নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ বছরে বলা যায় নির্বাচনের দিনই তাদের একটা ক্ষমতা থাকে। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক নির্বাচন হলেই সেটা সম্ভব। তখন তারা দেখাতে পারে অনেক ক্ষমতাধর সরকারকেও ভোট দিয়ে তারা নামিয়ে দিতে পারে। সেজন্য বলব, মুক্তভাবে ভোট দিতে পারলেই মানুষ বুঝতে পারবে তারা ক্ষমতার মালিক। তিনি বলেন, একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পালাবদলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দরকার। কিন্তু অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমরা দিতে পারছি না। আমাদের কয়েকটা নির্বাচন যেগুলোকে সবাই ভেবেছিল শান্তিপূর্ণ হয়েছে, সেগুলো আমরা তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতিতে করেছিলাম। এবারের নির্বাচনটা অনেক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, একটা নির্বাচিত সরকারের অধীনেই যে গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেওয়া যায়, সেটার একটা পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত, যেহেতু ২০১৪ সালে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি, এবার একটা ভালো নির্বাচন করতে পারি কিনা সেটার একটা পরীক্ষা ছিল। দুটো টেস্টে আমরা পাস করতে যাচ্ছি কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন। তিনি আরও বলেন, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮- এই তিনটা নির্বাচন অনেক সুন্দর হয়েছে। সমালোচনা হয়নি। আগে-পরে কোনো সহিংসতা হয়নি। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা মেনে নিয়েছিলেন। আমাদের প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন যে একটা ভালো নির্বাচন করতে পারে সেটা তারা প্রমাণ করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই ধারাবাহিকতা থাকল না। নির্বাচন নিয়ে এখনই বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা দেখছি। সহিংসতা আরও বেড়ে যাবে কিনা, সবাই ভোট দিতে যেতে পারবে কিনা- এগুলো নিয়ে মানুষের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই সংশয় থাকাটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
News Courtesy: http://www.bd-pratidin.com