ক্ষমতা কীভাবে চলে যাবে বলা যায় না

সাবেক এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন, সরকারের শত্রু বিএনপি নয়। খালেদা জিয়াও শেখ হাসিনার শত্রু নন। বর্তমান সরকারের বড় শত্রু মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসন, বিচার বিভাগে যেভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে ভবিষ্যতে এর চরম মূল্য সরকারকে দিতে হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতা কখন কীভাবে চলে যাবে তা বলা যায় না। বিএনপির দুর্দশা দেখে শিক্ষা গ্রহণ করুন। রাজনীতি, ক্ষমতার নামে বর্তমান সরকার যা করছে ভবিষ্যতে তাদের অবস্থা এর চেয়ে বেশি করুণ হতে পারে। বৃহস্পতিবার চ্যানেল আইয়ের টকশোয় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। টকশোর সঞ্চালক জিল্লুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বাঁশে ঘুণ ধরলে ওপর থেকে বোঝা যায় না। ভিতর থেকে সব নষ্ট হয়ে যায়। একটু চাপ পড়লেই ধসে পড়ে। বর্তমান সরকারের এমন অবস্থা। চারদিকে সুযোগসন্ধানী। তারাই সরকারকে ডোবাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক অখ্যাত প্রতিষ্ঠান আইআরআই সার্ভে করে বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমেরিকায় আইআরআইর মতো ৫ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের জরিপ নিয়ে জাতীয় সংসদে সিনিয়র নেতা, মন্ত্রীরা যেভাবে উল্লসিত হয়ে তোষামোদ করেছেন তাতে মনে হয়েছে আমাদের জাতীয় সংসদ স্তবক, অর্চনা দেওয়ার প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সব বিভাগের এমন অবস্থা। কোনো একটি প্রতিষ্ঠান ভালো নেই। সরকারি ব্যাংকগুলো ঘুণে ধরা। এখন ব্যাংকগুলো ১০ টাকার শেয়ার ছাড়লে ৪ টাকায় বিক্রি করা যাবে না। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বলে পরিচিত আমাদের বিচার বিভাগও এর বাইরে নয়। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আরেক বিচারপতি যে চিঠি লিখেছেন সেটা বিচার বিভাগকে কলঙ্কিত করেছে। মানুষ কোথায় যাবে? কী শিখবে? রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তো আছেনই, নেতারাও সব সময় নানা ধরনের অপরাধ করে বেড়াচ্ছেন।   

নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বিএনপি মধ্যবর্তী নির্বাচন চায়। তারা বলছে, জনগণের জন্য নির্বাচন চায়। আমি তাদের কাছে অনুরোধ করছি, তাহলে ঘোষণা দিন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের কোনো সদস্য ক্ষমতায় বসবেন না। তাহলে বলা যাবে এটা জনগণের জন্য। তিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে দেশের আরও ক্ষতি করছেন। কোনো জরিপ বিপক্ষে গেলে মনগড়া সার্টিফিকেট। পক্ষে গেলে বিগলিত হয়ে যান। মোদির জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন না। কীভাবে মধ্যবর্তী নির্বাচন চান আপনারা? সাবেক এই এমপি বলেন, বর্তমান অর্থমন্ত্রী বেফাঁস উক্তি করতে অনেক পারদর্শী। তিনি একদিন বললেন, ছাত্রদের অবশ্যই ভ্যাট দিতে হবে। পরদিন বললেন, কর্তৃপক্ষ দেবে ভ্যাট। আবার বললেন, আগামী বছর থেকে ছাত্রদের ভ্যাট দিতে হবে। এটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বড়লোকের সন্তানরা পড়ে না। শিক্ষার জন্য ভ্যাট- এটা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে আছে বলে আমি জানি না। এমন একটি সিদ্ধান্ত কেন নিলেন। এই বেফাঁস, অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড সরকারকে যে কোনো সময় নাড়িয়ে দিতে পারে।

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/special/2015/09/19/107382#sthash.y06mJ7Ky.dpuf